ফিরে আসা, তাকে ভাল লাগার কথা জানানো

৪ জুলাই ২০০৯ এর সকাল। যখন পিসেমশায়ের বাড়ি ফিরলাম ঘড়ির কাটা ১১ টায় পৌঁছে গেছে। বউ বরণ হল। সবাই অনেক  খুশি। কিন্তু আমার মাথায় শুধুমাত্র তার চিন্তা ঘুরপাক খাচ্ছে। তাই সিদ্ধান্ত নিলাম নতুন বউদিকে মেয়েটার ব্যাপারে জিগেস করব। রুমে গিয়ে দেখলাম প্রচুর লোক উনাকে ঘিরে আছে। এরকম অবস্থায় কথা বলা সম্ভব না। 

বাইরে অপেক্ষা করতে থাকলাম। এক সময় উনি টিউবওয়েল থেকে জল নিতে এলেন। কাছে গিয়ে বললাম, আপনার সাথে কথা আছে। উত্তরে উনি বললেন, কি কথা! বেশী কথা হলে পরে বলো। যেহেতু উনি ব্যাস্ত ছিলেন তাই আর জোর করলাম না। রোজকার মত বিকালে আমার প্রাইভেট টিউশন ছিল, তাই আর অপেক্ষা করা সম্ভব ছিলনা। সাইকেল নিয়ে বেরিয়ে পড়লাম। 

বাড়ি ফিরে স্নান এবং দুপুরের খাওয়া শেষ করে বই নিয়ে বসলাম। পড়াশোনার যথেষ্ট চাপ আছে, কিন্তু মোটেও পড়তে ইচ্ছে করছেনা। শুধুই তার কথা মনে পড়ছে। কি নাম সেটাও জানতে পারলাম না। নিজের অস্থিরতা বেড়েই চলল।

এভাবে কেটে গেল বেশ কিছুদিন। এর মধ্যে পড়াশোনার চাপে আর বাদুরগাছায় (পিসেমশায়ের বাড়ি) যাওয়া হয়নি, বউদির সাথে কথা বলবার সুযোগও হয়নি। ১১ জুলাই ২০০৯, রাতে বাবা আমাকে ডেকে বললেন, আমি যেন আগামীকাল গিয়ে বউদিকে আমাদের বাড়ি নিয়ে আসি। বাবা ফোন করে পিসেমশায়ের কাছে নিমত্রণ করলেন। 

পরদিন বিকালে (১২ জুলাই ২০০৯, রবিবার) বউদিকে আমাদের বাড়িতে নিয়ে এলাম। যাবার পথে ছোট একটা এক্সিডেন্টে আমার ডান হাতে চোট লেগেছিল। বউদি আসাতে আমি ভীষণ খুশি। এখন নিশ্চয় ঐ মেয়েটার ব্যাপারে সব জানতে পারব। তবে সারাদিন কোন সুযোগ হলনা। নতুন বউ ,পাড়া প্রতিবেশী আর বাড়ির লোক গল্প গুঁজবে উনাকে ব্যাস্ত রাখল। 

রাতে উনার সাথে বলা বলবার সুযোগ মিলল। মেয়েটার ব্যাপারে যত প্রশ্ন ছিল উনাকে করলাম। উত্তরে উনি বললেন, ওর নাম প্রিয়া। আমাদের বাড়ি থেকে ২ টা বাড়ি পরে ওদের বাড়ি। সম্পর্কে ওরা আমাদের প্রতিবেশী এবং আত্নীয়। ও তোমার ক্লাসে পড়ে এবং ওরা কর্মকার।

তার মত, তার নামটাও অনেক সুন্দর। প্রিয়া... বউদির উত্তর অনুযায়ী তার সাথে আমার যথেষ্ট মিল খুঁজে পেলাম। যেমন,

  • আমি এবং প্রিয়া দুজনেই একই কাষ্টের (কর্মকার)
  • আমাদের দুজনেরই বয়স সেইম।
  • আমরা উভয়ে একই ক্লাসে পড়ি।
  • এমনকি আমাদের বিভাগটাও এক (মানবিক)

ছোটবেলা থেকেই আমি খুব লাজুক প্রকৃতির। প্রেম-ভালবাসা তো বহু দূরের কথা, ক্লাসের বান্ধবীদের ধারে কাছেও ঘেঁষতাম না। সেই আমি আমতা আমতা করে বউদিকে বললাম, আমার ওকে (প্রিয়াকে) ভীষণ ভাল লেগেছে। সব সময় শুধু ওর কথায় মনে পড়ে। ভালবেসে ফেলেছি। প্লিজ, আপনি ওর সাথে আমার যোগাযোগের ব্যবস্থা করে দেন। ওকে ছাড়া আমার চলবেনা। 

বউদি একটু হেসে বললেন, ঠিক আছে। কয়েকদিন বাদে যখন আমি যাবো তখন তোমার সাথে কথা বলবার ব্যবস্থা করে দেবো। ও ফোন ব্যবহার করেনা। 

এখানে আমার বউদি সম্পর্কে কিছু কথা বলা দরকার। প্রিয়া এবং উনি একই ক্লাসে পড়তেন, সে হিসাবে বান্ধবী। বউদির ফেস অনেকটা স্মাইলি ফেস। উনার দিকে তাকালে মনে হয় উনি সব সময় হাসছেন!

শুক্রবার (২৪ জুলাই ২০০৯) বউদি উনার বাবার বাড়িতে বেড়াতে গেলেন। যাবার আগে উনাকে বার বার বলেছিলাম, আমার কথা গুলো যেন মনে থাকে। অপেক্ষার প্রহর শুরু হল।


Comments

Popular posts from this blog

তার মনে একটুখানি জায়গা পাওয়া, দ্বিতীয় কথা

দূর্গাপূজার নবমী, প্রিয়ার সাথে তৃতীয় কথা

প্রিয়ার সাথে প্রথম কথা, স্বপ্ন পূরণ

দাদার হঠাৎ বিয়ে, তাকে প্রথম দেখা